রাজধানীর শাহজাহানপুরের শান্তিবাগে একটি অফিসে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে বিভিন্ন মালামাল লুটপাট করেছে। এসময় দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ৭ জনকে আহত করেছে। আহতদের মধ্যে মাহবুব আলম খান নামে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনো দুইজন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় শাহজাহানপুর থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ৮/১০ জনকে আসামী করে একটি হত্যা ও লুটপাটের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার এজাহারে জানা গেছে, কিছু দুর্বৃত্তরা একটি ফ্ল্যাট দখলে নেয়ার চেষ্ট করে। এ ঘটনায় আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এরই জের ধরে গত ৫ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর ৬/১, শান্তিবাগের সুলতানা কটেজের তৃতীয় তলার মেসার্স ইউনিক ট্রেডার্সের অফিসে ১০/১২ জন সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রাসীরা লোহার রড, লাঠি, লোহার শাবল, চাপাতি, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে হামলা চালিয়ে ভাংচুর শুরু করে। সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে নৃসংশভাবে অফিস স্টাফ মাহবুব আলম খান (৪১) ও হৃদয় হোসেনকে (৩০) আঘাত করে। তারা প্রাণ বাঁচাতে ছাদের লিফটের রুমে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করে কিন্তু সন্ত্রাসীরা সেখানে গিয়ে নৃশংসভাবে হামলা করে এবং একজনকে লিফটের খালি স্থান দিয়ে নিচে ফেলে দেয়। খবর পেয়ে ফ্ল্যাট মালিক জাকির হোসেন শিকদার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে নজরুল ইসলাম তার হাতে থাকা লোহার শাবল দিয়ে তার মাথার ডানদিকে আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। পরে লাঠি দিয়ে আঘাত করে ডান হাত ও কব্জি ভেঙ্গে ফেলে। এসময় সাগর চাপাতি দিয়ে বাম হাতে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তাকে বাঁচাতে মাহবুব আলম খান এগিয়ে এলে নজরুল নৃশংসভাবে তার পেটের বাম পাশে লোহার শাবল ঢুকিয়ে দেয়। পরবর্তীতে তার গলায় গামছা পেঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ফেলে যায়। সাগর চাপাতি দিয়ে তার বাম পায়ের গোড়ালীর রগ কেটে দেয়। অন্যান্যরাও অস্ত্র দিয়ে মারধর করে। অফিস কর্মচারী হৃদয় হোসেন (৩০) তাদের বাধা দিলে সন্ত্রাসী মো. তুহিন তার হাতে থাকা রাম দা দিয়ে তার মাথায় কোপ দিয়ে গুরুতর জখম করে, তাদের সহযোগী মোফাজ্জল (৫০) বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করে তার কব্জি ভেঙ্গে ফেলে। সন্ত্রাসী শাহাদাত হোসেন এবং নজরুল ইসলাম হৃদয়ের শরীরে এলোপাথারী কুপিয়ে বাম হাতের কব্জি ও বুক-পিঠে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। পরে আহতদের আর্তচিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসী মনিরুলসহ অন্যান্যরা ওই অফিসের সিন্দুক ভেঙ্গে নগদ দশ লাখ টাকা লুট করে নিয়া যায়। যাবার সময় সন্ত্রাসীরা জাকির হোসেনকে হত্যা করে মৃতদেহ আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে ম্যাচ খুঁজতে থাকে। আগুন দিতে না পেরে হুমকি দিয়ে বলে যদি বেঁচে থাকিস তাহলে তোকে হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে ফেলবো। দেখি তোর কোন বাপ তোদের বাঁচায়। আরও জানা যায়, তাদেরকে গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে শান্তিনগরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহবুব আলমকে মৃত ঘোষণা করেন এবং ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
এ প্রসঙ্গে আহতাবস্থায় ভুক্তভোগী জাকির হোসেন শিকদার জানান, নজরুলের কাছ থেকে আমি অফিসের ফ্ল্যাটটি কিনেছিলাম কিন্তু নজরুল আমার কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা না দেয়ায় ও তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করায় আমাদের সবাইকে হত্যা করাই ছিলো মূল উদ্দেশ্য। তাদের নৃশংস হামলায় মাহবুব আলমের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই বলে জানান তিনি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

ফ্লাট দখল নিয়ে দ্বন্দ্ব আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে ২ জন লোহার রড, লাঠি, শাবল, চাপাতি, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভাংচুর করা হয়
রাজধানীতে অফিসে দুর্বৃত্তের হামলা নিহত ১ আহত ৭
- আপলোড সময় : ২০-০৮-২০২৪ ১২:২৪:২৬ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২০-০৮-২০২৪ ১২:২৪:২৬ পূর্বাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ